আজ বুধবার ৬ আগষ্ট ২০২৫ সংবাদপত্রের প্রধান শিরোনামের সারাংশ

দৈনিক নিউ এজ: 'বামপন্থি দলগুলোর জুলাই ঘোষণাপত্র অনুষ্ঠান বর্জন' 

আজ দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা বামপন্থি দলগুলোর জুলাই ঘোষণাপত্র বর্জন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিশেষত ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ-এর প্রথম পাতায় এই খবরটি স্থান পেয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্তর্ভুক্ত দলগুলো, যেমন— বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), অন্তর্বর্তী সরকার আয়োজিত 'জুলাই ঘোষণাপত্র' অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি। 

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কয়েকটি রাজনৈতিক দলের উপস্থিতিতে এই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করেন। তবে অনুষ্ঠানে অংশ না নেওয়া দলগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘোষণাপত্র প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় তাদের সম্পৃক্ত করা হয়নি, তাই তারা অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন। 

ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক অভিযোগ করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে বিভাজন সৃষ্টির নীতি অনুসরণ করছে। তিনি জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নে অধিকাংশ দলকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি এর সর্বশেষ উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন। বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যান্য দলও একই ধরনের অভিযোগ করেছে।


সমকাল: 'জুলাই ঘোষণাপত্র সংবিধানের তপশিলে, আন্দোলনকারীরা পাবে আইনি সুরক্ষা' 

দৈনিক -এর প্রধান শিরোনাম অনুযায়ী, জুলাই ঘোষণাপত্রকে সংস্কারকৃত সংবিধানের তপশিলে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ঘোষণাপত্রকে আগামী নির্বাচনে গঠিত সরকার সংবিধানের তপশিলে যুক্ত করবে। ঘোষণাপত্রে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের 'জাতীয় বীর' হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং অভ্যুত্থানকারীদের আইনি সুরক্ষা প্রদানের বিষয়েও উল্লেখ আছে। 

গতকাল মঙ্গলবার জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২৮ দফাসংবলিত এই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। ঘোষণাপত্রে অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে। 

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঘোষণাপত্রটির খসড়ায় বিএনপির দেওয়া কিছু মতামত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেমন— একাত্তরের ২৬শে মার্চ দিয়ে ঘোষণাপত্র শুরু করা এবং পঁচাত্তরের সাতই নভেম্বরের সিপাহি-জনতার বিপ্লবের স্বীকৃতি রাখা। তবে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ কয়েকটি দলের দাবি ছিল ঘোষণাপত্র সংবিধানের প্রস্তাবনায় রাখার, যা গ্রহণ করা হয়নি।


দ্য ডেইলি স্টার: 'ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন' 

ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার সহ দেশের প্রায় সব পত্রিকার প্রধান শিরোনামে আজ 'ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন' খবরটি প্রাধান্য পেয়েছে। গতকাল রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই ঘোষণা দেন। 

তিনি জানান, আগামী রোজার আগেই, অর্থাৎ ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দেওয়া হবে। তিনি বলেন, 'আমাদের সর্বশেষ দায়িত্ব পালনের পালা নির্বাচন অনুষ্ঠান।' 

ভাষণে তিনি আরও বলেন, একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং এই নির্বাচন যেন দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকে, সে জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষণে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন।


দৈনিক ইত্তেফাক: 'নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি' 

দৈনিক ইত্তেফাক-এর প্রথম পাতায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণাকে বিএনপি স্বাগত জানিয়েছে। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, এই ঘোষণার মাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে সব ধরনের অনিশ্চয়তা দূর হয়েছে। 

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছেন— একটি জুলাই ঘোষণাপত্র এবং অন্যটি নির্বাচনের ঘোষণা। বিএনপি উভয় ঘোষণাকেই স্বাগত জানাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এই ঘোষণা জনগণের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। 

একই সঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দলও নির্বাচনের এই ঘোষণাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে বলে খবরে জানানো হয়েছে।


দৈনিক প্রথম আলো: 'গণ-অভ্যুত্থানের শহীদেরা 'জাতীয় বীর'' 

দৈনিক প্রথম আলো-এর দ্বিতীয় প্রধান শিরোনামে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের 'জাতীয় বীর' হিসেবে ঘোষণার খবরটি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। 

২৮ দফা সংবলিত এই ঘোষণাপত্রের ২৪ নম্বর দফায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের 'জাতীয় বীর' হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে, শহীদদের পরিবার, আহত যোদ্ধা এবং আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতাকে প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা দেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয়েছে। 

ঘোষণাপত্রের শেষ দফায় বলা হয়েছে, এই ঘোষণাপত্রটি পাঁচই আগস্ট ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ী জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। এতে আরও বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্বাচিত সরকার এই ঘোষণাপত্রকে সংস্কারকৃত সংবিধানের তপশিলে অন্তর্ভুক্ত করবে।


বণিক বার্তা : 'ফ্যাসিবাদের পথ সুগম করেছে এক-এগারোর সরকার' 

বণিক বার্তা-এর প্রথম পাতায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, জুলাই ঘোষণাপত্রের ছয় নম্বর দফায় বলা হয়েছে যে 'এক-এগারোর ষড়যন্ত্রমূলক ব্যবস্থা শেখ হাসিনার একচ্ছত্র ক্ষমতা ও ফ্যাসিবাদের পথ সুগম করেছে।' একই সঙ্গে এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এক-এগারোর সরকারসংশ্লিষ্ট অনেকেই ওই ব্যবস্থাকে বৈধ এবং সংস্কারের পথ সুগমকারী হিসেবে দাবি করেন। 

২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনকেও তারা সুষ্ঠু নির্বাচন হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন। মজার বিষয় হলো, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ২০০৮ সালের ওই নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এই ধরনের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আলোচনা চলছে।


সংবাদ : 'গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি: গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে দগ্ধ ১১' 

সংবাদ পত্রিকার দ্বিতীয় প্রধান শিরোনামে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের অনুষ্ঠানে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণের খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বর্ষপূর্তি উদ্যাপন অনুষ্ঠানে এই বিস্ফোরণের ঘটনায় কমপক্ষে ১১ জন দগ্ধ হয়েছেন। 

আহতদেরকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুর ২টার দিকে 'ফ্যাসিস্টের পলায়নের' প্রতীক হিসেবে হেলিকপ্টার আকৃতির গ্যাস বেলুন ওড়ানো হচ্ছিল। বেলুনগুলো বিদ্যুতের তারে লেগে আগুন ধরে গেলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। 

এতে আশেপাশের বেশ কয়েকজন দগ্ধ হন। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি উদযাপনের আনন্দকে কিছুটা হলেও ম্লান করে দিয়েছে।


কালের কণ্ঠ : '১৯৭১ স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ, ২০২৪ স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ' 

দৈনিক কালের কণ্ঠ-এর প্রথম পাতায় প্রকাশিত খবরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি ভার্চুয়াল বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। লন্ডন থেকে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, '১৯৭১ সাল ছিল স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ, আর ২০২৪ সাল ছিল স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ।' 

তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, দেড় হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন এবং ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। 

তারেক রহমান ১৯৭১ সালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদেরও স্মরণীয় করে রাখার কথা বলেন।


মানবজমিন: 'কক্সবাজারে এনসিপি নেতারা, নানা আলোচনা' 

মানবজমিন-এর প্রথম পাতায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের দিন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ পাঁচ নেতার হঠাৎ কক্সবাজার সফর নিয়ে নানা আলোচনা তৈরি হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনসিপি'র মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ পাঁচ নেতা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার যান। 

তাদের এই সফরকে ঘিরে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে 'গোপন বৈঠকের' গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে পরে জানা যায়, পিটার হাস বাংলাদেশে নেই। এনসিপি নেতারা জানিয়েছেন, পদযাত্রা কর্মসূচির ধকল সামলাতে এবং ক্লান্তি কাটাতে তারা সাগরপাড়ে ঘুরতে গেছেন। তারা এই খবরকে 'মিডিয়া প্রোপাগান্ডা' হিসেবে উল্লেখ করেছেন।


দেশ রূপান্তর: 'পেঁয়াজ ডিমের দাম চড়া' 

দৈনিক দেশ রূপান্তর-এর প্রথম পাতায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজ ও ডিমের দাম বেড়েছে। ঢাকার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি। 

একইভাবে ফার্মের ডিমের দাম প্রতি ডজনে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা হয়েছে। যদিও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় পেঁয়াজের দাম কম, ডিমের দাম কিছুটা বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে ডিমের উৎপাদন কম হওয়ায় এবং অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় ডিমের চাহিদা বেড়েছে, যার কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। 

পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে স্থানীয় মজুদ কমে যাওয়া এবং সংরক্ষণের অভাবকে উল্লেখ করা হয়েছে।


টেগ : বাংলাদেশ, নির্বাচন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস, জুলাই গণঅভ্যুত্থান, জুলাই ঘোষণাপত্র, বিএনপি, বাম দল, নিউ এজ, সমকাল, দ্য ডেইলি স্টার, ইত্তেফাক, প্রথম আলো, বণিক বার্তা, সংবাদ, কালের কণ্ঠ, মানবজমিন, দেশ রূপান্তর, পেঁয়াজ, ডিম, দ্রব্যমূল্য, রাজনৈতিক সংবাদ, জাতীয় খবর।

Post a Comment

Previous Post Next Post