আজকের দৈনিক পত্রিকাসমূহের শিরোনাম ও সংবাদ সংক্ষেপ: ট্রাম্পের শুল্ক হ্রাস, রাজনৈতিক সংকট এবং চলমান সামাজিক অস্থিরতা

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহ্রাস থেকে শুরু করে রাজনৈতিক সংকট, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, এবং মাদ্রাসা শিক্ষার সমস্যা—সবই উঠে এসেছে আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনামে। ড. ইউনূস সরকারের কূটনৈতিক বিজয়, আওয়ামী লীগের নাশকতার ছক, এবং শাহবাগে সংঘর্ষের মতো ঘটনাগুলো বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতারই প্রতিচ্ছবি। একদিকে যেমন শুল্ক কমেছে, তেমনি অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোও রয়ে গেছে। অন্যদিকে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও মানবপাচারের মতো সামাজিক সমস্যাগুলো এখনো উদ্বেগের কারণ।

 

আমারদেশ: বাণিজ্য আলোচনায় সফল বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে, যা দেশের জন্য একটি বড় কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিজয়। এই সফল আলোচনার নেতৃত্বে ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, যাকে সহযোগিতা করেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই অর্জনকে দেশের জন্য ‘বিরাট সুখবর’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। চূড়ান্ত এই শুল্ক হার দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ—যেমন ভারত ও শ্রীলঙ্কার তুলনায় কম হওয়ায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে থাকবে। যদিও বাংলাদেশ ২০ শতাংশের নিচে শুল্ক প্রত্যাশা করেছিল, এই ফলাফলকে একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে চীনের উপর ৫৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে এটি বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের জন্য স্বস্তিদায়ক হয়েছে।

এই সাফল্যের পেছনে সরকারের কৌশলগত পদক্ষেপ এবং যুক্তিপূর্ণ আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।


নয়া দিগন্ত: হাসিনাকে ফেরাতে কলকাতায় বসে ঢাকায় নাশকতার ছক

নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের কর্মীরা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ঢাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে। এই ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রে রয়েছে কলকাতায় জড়ো হওয়া সাবেক সংসদ সদস্য ও অন্যান্য নেতারা, যারা টেলিগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশে থাকা কর্মীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন।

এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঢাকার বসুন্ধরা, উত্তরা ও শাহবাগের মতো বিভিন্ন এলাকায় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প পরিচালনা করা হয়েছে, যেখানে কিছু সেনা সদস্য ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তারাও জড়িত। এরই জেরে মেজর সাদেক নামের এক সেনা কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে এবং বর্তমানে তিনি সেনা হেফাজতে রয়েছেন। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, ৮ই আগস্ট বড় ধরনের নাশকতা ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছিল, যা ব্যর্থ হয়েছে।

তবে নভেম্বরের দিকে নতুন করে হামলার ছক কষা হচ্ছে বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে, তবে তারা এখনই কোনো নিরাপত্তা হুমকির বিষয়ে নিশ্চিত করছে না।


প্রথম আলো: শুল্ক কমেছে, বাংলাদেশে স্বস্তি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার পর বাংলাদেশের পণ্যের উপর থেকে শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে, যা দেশের জন্য একটি বড় স্বস্তির কারণ। এই সাফল্য এসেছে সরকারের প্রতিশ্রুতি ও কৌশলের কারণে।

বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আমদানি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং প্রায় ২৬ কোটি ডলারের গম, এলএনজি, তুলা ও সয়াবিন আমদানির চুক্তি করেছে। এছাড়াও, শ্রম আইন সংশোধন এবং আইএলও কনভেনশন মেনে চলার ব্যাপারেও বাংলাদেশ অঙ্গীকার করেছে। এই শুল্ক হ্রাসের ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত ভারতের চেয়েও বেশি প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে এসেছে।

বাণিজ্য বিশ্লেষকরা এই অর্জনকে কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখছেন। তবে তারা সতর্ক করে বলেছেন, এটি কেবল সাময়িক স্বস্তি, ভবিষ্যতে আরও সুনির্দিষ্ট ও টেকসই বাণিজ্য কৌশল প্রয়োজন।


মানবজমিন: ইতিবাচক অগ্রগতি হলেও আত্মতুষ্টির কারণ নেই

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহার কমানোর সিদ্ধান্তকে মানবজমিন একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে দেখছে। এতে করে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত বড় ধরনের ঝুঁকি থেকে মুক্ত হয়েছে এবং ভারতের তুলনায় প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে এসেছে। তবে অর্থনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২০ শতাংশ শুল্ক এখনও অনেক বেশি এবং এই সাফল্যে আত্মতুষ্ট হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

তাদের মতে, বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত করা, নীতিগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা এবং শ্রমিক অধিকারের বিষয়ে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ নেতারা মনে করছেন, শুল্ক কমায় চীন ও ভিয়েতনাম থেকে অর্ডার বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা বাড়ছে, কিন্তু এই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সরকারের সহায়তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

সামগ্রিকভাবে, এই সিদ্ধান্ত স্বস্তি দিলেও রপ্তানি সক্ষমতা বাড়াতে বাস্তবমুখী পরিকল্পনা অপরিহার্য।


কালের কণ্ঠ: অনেক দেশের শুল্ক ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমাল যুক্তরাষ্ট্র

কালের কণ্ঠের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র কেবল বাংলাদেশ নয়, বরং বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশের জন্য শুল্কহার পুনর্নির্ধারণ করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের ওপর আরোপিত শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমে ২০ শতাংশ হয়েছে।

একইভাবে কম্বোডিয়ার শুল্ক ৪৯ শতাংশ থেকে কমে ১৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ৪৪ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের ৪৬ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্যও শুল্ক কমানো হয়েছে। তবে কিছু দেশের ক্ষেত্রে শুল্কহার বাড়ানোও হয়েছে, যেমন সুইজারল্যান্ডের ক্ষেত্রে শুল্ক ৩১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৯ শতাংশ হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতে, এই পরিবর্তন আনা হয়েছে মূলত ব্যবসায়িক ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য। শুল্ক হ্রাসের এই পদক্ষেপ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানির সুযোগ বাড়িয়েছে এবং বাংলাদেশের জন্য এটি একটি ইতিবাচক পরিবর্তন।


আজকের পত্রিকা: আটক সেনা কর্মকর্তার বিষয়ে তদন্ত আদালত গঠন : আইএসপিআর

রাজনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে এক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আইএসপিআর (আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর) জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় একটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে। যদিও অভিযুক্ত কর্মকর্তার নাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি, তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেজর সাদিকুল হকের নাম ছড়িয়ে পড়েছে।

তিনি আওয়ামী লীগের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে আটক হয়েছেন। সেনাসদরের ব্রিফিংয়ে নিশ্চিত করা হয়েছে যে মেজর সাদিক বর্তমানে সেনা হেফাজতে রয়েছেন। এর আগে, একটি গোপন বৈঠকে মেজর সাদিকের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়ার পর তাকে আটক করা হয়।

সেনাবাহিনী একটি অরাজনৈতিক এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, তাই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আইএসপিআর জানিয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হবে না।


দেশ রূপান্তর: বাংলাদেশের ওপর নিবিড় নজর রাখছে ভারত

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, নয়াদিল্লি বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি বলেছেন, ভারতের জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

সম্প্রতি লোকসভায় বিজেপির এক এমপি অভিযোগ করেন, ঢাকায় একটি প্রদর্শনীতে 'সালতানাত-ই-বাংলা' নামের একটি ইসলামপন্থি গোষ্ঠী ভারতের কিছু রাজ্যকে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে দেখিয়ে একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছে। তবে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য যাচাই প্ল্যাটফর্ম 'বাংলাফ্যাক্ট' এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে।

জয়শঙ্কর আরও বলেন, ভারত তার জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আপস করবে না এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর তাদের নজরদারি অব্যাহত থাকবে।


সংবাদ: শাহবাগে অবরোধকারীদের ওপর 'প্রকৃত জুলাই যোদ্ধাদের' হামলা

রাজধানীর শাহবাগে 'জুলাই যোদ্ধা' নামে পরিচিত একদল আন্দোলনকারী টানা ৩২ ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে রাখে। তাদের দাবি ছিল জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, শহীদদের স্বীকৃতি এবং সংবিধানে তা অন্তর্ভুক্ত করা। এতে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে তীব্র যানজট তৈরি হয় এবং সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে ওঠে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় 'প্রকৃত জুলাই যোদ্ধা' পরিচয়ে আরেকদল আন্দোলনকারী শাহবাগে এসে অবরোধ ভেঙে দেয় এবং দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দুই পক্ষকেই লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, তারা আলোচনার মাধ্যমে অবরোধকারীদের সরানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা রাজি হয়নি। এই ঘটনায় সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে রোগী এবং যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হন।


সমকাল: মৌলিক সংস্কারের যৌগিক চিত্র

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি সংলাপে ২০টি মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যার মধ্যে ৯টি বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়নি। বিএনপি ৪টি সিদ্ধান্তে রাজি হয়নি এবং ৩টিতে আপত্তির সঙ্গে একমত হয়েছে। জামায়াত একটিতে নারাজ এবং ৩টিতে আপত্তি জানিয়েছে। এনসিপি নারী মনোনয়নের হার ৭ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সীমিত করা, সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন এবং সংবিধান সংশোধনে উচ্চকক্ষের ক্ষমতা নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হয়েছে, কারণ বিএনপি এবং কিছু দল এসব মানতে রাজি নয়। তবে প্রধানমন্ত্রীর পদে সর্বোচ্চ ১০ বছর থাকার প্রস্তাবে সব দলই একমত হয়েছে।

জুলাই সনদের খসড়া চূড়ান্ত করে রাজনৈতিক দলগুলোকে দেওয়া হবে, যেখানে ঐকমত্য এবং আপত্তির বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে।


যুগান্তর: কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছেনি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি

গত বছরের ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছিল। ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার এক বছর পরও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। এই এক বছরে খুন, ধর্ষণ, ডাকাতি, এবং অন্যান্য অপরাধ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১১টি খুনের ঘটনা ঘটছে।

মানবাধিকার লঙ্ঘন যেমন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, কারাগারে মৃত্যু এবং সাংবাদিক নির্যাতনও বেড়েছে। পুলিশের দুর্বলতা, জনগণের আইন না মানা এবং রাজনৈতিক দৌরাত্ম্য এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। তবে সরকার বলছে, তারা অপরাধ দমনের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এখন মানুষ সহজেই মামলা করতে পারছে বলেই পরিসংখ্যান বেশি দেখা যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জনগণের আস্থা ফিরে না এলে এবং নির্বাচন না হলে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে না।


বণিক বার্তা: মাদ্রাসা শিক্ষা: বছরে দুই লাখ গ্র্যাজুয়েট বের হলেও প্রাতিষ্ঠানিক কর্মে নেই বেশির ভাগই

বাংলাদেশে প্রতি বছর আলিয়া ও কওমি মাদ্রাসা থেকে প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট হলেও, তাদের বেশিরভাগই প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানে প্রবেশ করতে পারছে না। এর প্রধান কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আধুনিক কারিগরি শিক্ষা থেকে তাদের বিচ্ছিন্নতা, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির অভাব, প্রযুক্তি এবং যোগাযোগ দক্ষতার ঘাটতি।

কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ আরও সীমিত, কারণ দাওরায়ে হাদিস ছাড়া তাদের অন্য কোনো স্তরের শিক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি নেই। ফলে, অধিকাংশ শিক্ষার্থী ইমামতি, শিক্ষকতা বা ক্ষুদ্র ব্যবসার দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হচ্ছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ মাত্র ৪ শতাংশের মতো।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদ্রাসা শিক্ষার কারিকুলামকে যুগোপযোগী করা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের জন্য কর্মসংস্থানের পথ সুগম করা জরুরি, অন্যথায় তারা বেকারত্বের ফাঁদে পড়ে থাকবে।


নিউ এইজ: ট্যুরিস্ট ভিসায় মানবপাচার বেড়েছে

মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানো বন্ধ থাকার কারণে বাংলাদেশ থেকে ট্যুরিস্ট ভিসার আড়ালে মানবপাচারের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, মালয়েশিয়া গত বছরের ৩১শে মে থেকে নিয়মিত শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করলে অনেক কর্মীপ্রত্যাশী হতাশ হয়ে দালালদের মাধ্যমে অবৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশের চেষ্টা করে।

মালয়েশিয়ার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ মার্চ থেকে প্রায় ২৭০ জন বাংলাদেশিকে প্রবেশে বাধা দিয়েছে, কারণ তারা পর্যটকের ভিসার শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এই ধরণের মানবপাচার চক্রের শিকার হয়ে অনেকে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। চট্টগ্রামের মোজাফফরের মতো অনেক যুবক কাজের আশায় ট্যুরিস্ট ভিসায় মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন, কিন্তু সেখানে নির্যাতনের শিকার হয়ে জেল খেটে দেশে ফেরত এসেছেন।

বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনাগুলোকে পর্যটনের ছদ্মবেশে মানবপাচার হিসেবে দেখছেন এবং সরকারের প্রতি এই চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।


 ট্যাগ

বাংলাদেশ সংবাদ, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক, ডোনাল্ড ট্রাম্প, ড. মুহাম্মদ ইউনূস, শেখ হাসিনা, নয়া দিগন্ত, প্রথম আলো, আমারদেশ, কালের কণ্ঠ, মানবজমিন, জুলাই বিপ্লব, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মাদ্রাসা শিক্ষা, মানবপাচার, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক, রাজনৈতিক সংকট, বাংলাদেশ অর্থনীতি, শ্রমিক অধিকার, রাজনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক।

Post a Comment

Previous Post Next Post