ক্ষমতা গ্রহণের পর এমবিএস বেশ কিছু বিতর্কিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এর মধ্যে রয়েছে ইয়েমেনে সামরিক হস্তক্ষেপ, বিলাসবহুল সামগ্রীর প্রতি আসক্তি, এবং দুর্নীতির অভিযোগে বহু প্রিন্স ও ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার।
তিনি সৌদি সমাজে কিছু সংস্কারও এনেছেন, যেমন নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি এবং 'আবায়া' পরার বাধ্যবাধকতা শিথিল করা। তবে তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের দমনের অভিযোগ রয়েছে।
সাংবাদিক জামাল খাসোগজি হত্যাকাণ্ডে তার নাম জড়িয়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনার শিকার হন তিনি। এই হত্যাকাণ্ডের দায় তিনি সৌদি আরবের নেতা হিসেবে স্বীকার করলেও, নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এমবিএস-এর এই বিতর্কিত ও দ্রুত উত্থান তাকে সৌদি আরবের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী চরিত্রে পরিণত করেছে।
সৌদি রাজতন্ত্রের বর্তমান কার্যত শাসক মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)-এর ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আসার পেছনের কাহিনি চমকপ্রদ এবং বিতর্কিত। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কীভাবে তিনি তার ক্ষমতা সুসংহত করেছেন, যা শুরু হয়েছিল তার বাবা বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের রাজত্বকালে।
শুরুতে বাদশাহ সালমান তার ভাইপো মোহাম্মদ বিন নায়েফকে ক্রাউন প্রিন্স মনোনীত করলেও মাত্র তিন মাসের মধ্যে তাকে সরিয়ে নিজের পুত্র মোহাম্মদ বিন সালমানকে ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে ঘোষণা করেন।
২৯ বছর বয়সে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই এমবিএস তার বাবাকে কার্যত গৃহবন্দী করে ফেলেন। তিনি বাবাকে তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন এবং এমনকি নিজের মায়ের থেকেও বিচ্ছিন্ন করে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর তিনি তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, তৎকালীন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফকে সরিয়ে দিতে এক নাটকীয় পদক্ষেপ নেন।
এক বৈঠক চলাকালীন নায়েফকে ডেকে পাঠানো হয় এবং অস্ত্রের মুখে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। এরপর তাকে গৃহবন্দী করা হয় এবং মোহাম্মদ বিন সালমানকে নতুন ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই সিদ্ধান্তকে রাজপরিবারের বেশিরভাগ সদস্যই সমর্থন করেন।